গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রশ্নে ভারতীয়-উপমহাদেশে আশঙ্কা বাড়ছে
মারাত্মক সেই স্লো-পয়জন৷ গ্লোবাল ওয়ার্মিং। তাকে নিয়ে রাষ্ট্রপু্ঞ্জের ইন্টার গভর্ণমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) ফেব্রুয়ারিতে প্যারিসে তাদের প্রথম রিপোর্টে বলেছিল, মানুষই কালপ্রিট। তাই সতর্ক না হলে মাত্র ৫০ বছরে ডুবে যেতে পারে সুন্দরবন। সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে জলস্তর কুল ছাপিয়ে ভাসাতে পারে ভারত-বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলকেও। আর শুক্রবার ব্রাসেলসে আই পি সি -র দ্বিতীয় রিপোর্টে সতর্ক করা হচ্ছে হিমালয়কে নিয়ে। বলা হচ্ছে, ৫০ নয়, ৩০ বছরেই হিমালয়ের যাবতীয় হিমবাহের পাঁচ ভাগের চার ভাগই গরমের ঠেলায় গলে যাবে। ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বরফের চাদর গুটিয়ে ১ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার হয়ে যাবে। শুকিয়ে যাবে গঙ্গা, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র। ভয় বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়েও। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশিরা আশ্রয় নেবে ভারতে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
মজার কথা হচ্ছে, ভারত নিজের দোষে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। বরং আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চিনের কুকর্মের খেসারত দিতে হচ্ছে। তারা কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কিংবা সালফার-ডাই-অক্সাইডের মত গ্রিন হাউস গ্যাস প্রকৃতিতে উগরে দেয় ভারতের থেকে অনেক বেশি। পরিসংখ্যান বলছে - এক জন মার্কিন নাগরিক বছরে যে পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিবেশে ছড়ায়, ১৭ জন ভারতীয় উপমহাদেশের নাগরিক সমপরিমাণ দূষণের জন্য দায়ী। পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে আমেরিকা সব থেকে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস উত্পাদন করে। কালো তালিকায় এর পরেই চিন৷ কিন্তু তাতে কি? জোর যার, মুলুক তার।
ভারতের উপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে। অথচ কালো তালিকার শীর্ষে থাকা আমেরিকা, চিন বা অস্ট্রেলিয়া এই সঙ্কটেও মাথা নোয়াতে নারাজ। তারা ফেব্রুয়ারির রিপোর্টকে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে শুধু জানিয়েছে, এখনই কিয়োটো প্রোটোকলে সই করতে রাজি নয় তারা। অজুহাত? দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে।
তবে যে যাই করুক, আগামী ৫০ বছরে যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.১ থেকে ৬.৪ ডিগ্রি সেল্সিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে, তা নিয়ে আই পি সি সি-র দু-হাজার সদস্য বিজ্ঞানীর সন্দেহ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পৃথিবীর সব দেশ যদি সমঝোতায় এসে, একত্রিত ভাবে ১০ - ১৫ বছর গ্রিন হাউস গ্যাস উদ্গীরণ বন্ধ করতে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়, তা হলে এই শতকের শেষ দিকে তাপমাত্রার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। রক্ষা পেতে পারে ধরিত্রী।
কবে হবে সে সব ব্যবস্থা? জানা নেই। ফলে, তত দিন রাষ্ট্রপুঞ্জের এনভায়রণমেন্ট প্রোগ্রামের প্রধানের হুঁশিয়ারিটাই, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ক্ষেত্রে ক্যাচলাইন হয়ে থাকবে - " সতর্ক হওয়ার শেষ বিন্দুটাও আমরা পেরিয়ে এসেছি"।
Best viewed by AdorshoLipi font. If not installed in your system, then download and paste the font file in [Fonts] folder. Go to Control Panel, Switch to Classic View (if Control Panel is in Category View, otherwise skip this step)*, right click on Fonts folder and paste.
* Applicable for M.S. Windows XP